আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের বিষয়ে আরও একবার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন। এবার তিনি ভারতের বাজারে Apple এর ক্রমবর্ধমান উপস্থিতিকে নিশানা করেছেন। ট্রাম্পের বক্তব্য অনুযায়ী ভারতের পক্ষ থেকে আমেরিকায় ‘জিরো ট্যারিফ ট্রেড ডিল’ এর প্রস্তাব করা হয়েছে, কিন্তু তাও আমেরিকা ভারতের সঙ্গে ব্যাবসা করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে না।
ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুযায়ী, সম্প্রতি ট্রাম্প Apple এর সিইও টিম কুককে ভারতে iPhone তৈরি করতে বন্ধ করতে বলেছেন। ট্রাম্প চাইছেন আমেরিকাতেই Apple ফোনের প্রোডাকশন হোক। তিনি মজার ছলে অথচ স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, “টিমকে নিয়ে আমার সামান্য সমস্যা রয়েছে। সে চায় ভারতে iPhone তৈরি করতে, অথচ আমি তা চাই না। Apple এর আমেরিকাতেই তাদের ফোন তৈরি করা উচিৎ।”
ভারত সম্পর্কে বড়সড় পরিকল্পনা
বিগত বেশ কিছু সময় ধরে অ্যাপেল চীনে তাদের প্রোডাকশন কমিয়ে চলেছে। কোভিড-19 মহামারির সময় চীনে প্রোডাকশন বন্ধ হয়ে গেলে এবং আমেরিকা-চীন ট্যারিফ ওয়ার শুরু হলে অ্যাপেল বিকপ্ল হিসাবে ভারতে তাদের আইফোন তৈরি করা শুরু করে। এই কারণেই ভারতে অ্যাসেম্বলি ইউনিট স্থাপন করা হয় এবং ধীরে ধীরে প্রোডাকশন বাড়তে থাকে।
কোম্পানি 2026 সালে ভারতে প্রতি বছর 6 কোটিরও বেশি iPhone তৈরি করতে চাইছে, যা বর্তমান প্রোডাকশন ক্যাপাসিটির প্রায় দ্বিগুণ। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে গোটা বিশ্বের বাজারে পাঠানো iPhone এর মধ্যে 28% চীনে তৈরি করা হয়, তবে ভারতের মার্কেট শেয়ার ধীরে ধীরে বেড়ে চলেছে।
ভারতে Apple এর স্ট্র্যাটেজিতে পড়তে পারে প্রভাব
ট্রাম্প এমন সময় তাঁর বক্তব্য প্রকাশ করেছেন, যখন Apple ভারতকে তাদের গ্লোবাল ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসাবে তৈরি করছে। রাজনৈতিক চাপের কারণে ভারতে প্রোডাকশন কম বা বন্ধ করা হলে, শুধুমাত্র ভারতের ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরেই প্রভাব পড়বে না, একইসঙ্গে এর ফলে iPhone এর দামও বৃদ্ধি পেতে পারে। ট্রাম্প আরও জানিয়েছেন, ভারতে কিছু বেচা সহজ নয়। এর থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তিনি ভারতের ব্যাবসায়িক পরিস্থিতিকে খুব একটা ভরসা করেন না।
Apple-এর বক্তব্য
এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে অ্যাপেলের পক্ষ থেকে অফিসিয়ালি কোনো কমেন্ট করা হয়নি। তবে ট্রাম্পের বক্তব্যের পর ভারতীয় আধিকারিকরা অ্যাপেলের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। নিউজ এজেন্সি পিটিআইয়ের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, কোম্পানির পক্ষ থেকে ভারত সরকারকে আশ্বাস দিয়ে জানানো হয়েছে, ভারতে কোম্পানির ম্যানুফ্যাকচারিং বা বিনিয়োগ পরিকল্পনার ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন করা হয়নি এবং ভারতে অ্যাপেলের গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হিসাবেই থাকবে।