হ্যালো… আপনার পার্সেল ধরা পড়েছে… নকল কাস্টম অফিসার সেজে মুম্বাইয়ের এক ব্যাক্তির থেকে লুটে নেওয়া হল 2.65 লক্ষ টাকা

অনলাইন ঠগ জোচ্চোররা সাধারণ মানুষদের ঠকানোর নতুন নতুন উপায় বের করেই চলেছে। সরকারের পক্ষ থেকে জনগণকে যতই সতর্ক করা হচ্ছে এরা লোক ঠকানোর ততই নতুন এবং ইউনিক উপায় বের করে চলেছে। এবার মুম্বাই থেকে অনলাইন ফ্রডের এমন এক ঘটনার কথা উঠে এসেছে যেখানে নকল কাস্টম অফিসার সেজে এক ব্যাক্তির থেকে 2.65 লক্ষ টাকা লুট করা হয়েছে।

কিভাবে হল অনলাইন ফ্রড?

মিডিয়া রিপোর্ট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী মুম্বাইয়ের কোলাবা অঞ্চলের এক 50 বছর বয়সী ব্যাক্তির সঙ্গে এই FedEx parcel scam হয়েছে। গত 17 মে এই ব্যাক্তিকে Skype call করে এক অজ্ঞাত ব্যাক্তি নিজেকে কাস্টম অফিসার হিসাবে পরিচয় দেন।

এই “কাস্টম অফিসার” প্রতারিত ব্যাক্তিকে জানান Mumbai airport এ তাঁর একটি পার্সেল ধরা পড়েছে, যেটি তাইওয়ানে পাঠানো হচ্ছিল। তাকে আরও বলা হয় এই পারসেলে একটি laptop, passport এবং credit card এর পাশাপাশি drugs পর্যন্ত রয়েছে।

পার্সেলে বেআইনি দ্রব্য ধরা পড়ার কথা জানানোর পর সেই “অফিসার” কলটি তাঁর সিনিয়রের কাছে ট্রান্সফার করে দেয়। এরপর সেই নকল উচ্চপদস্থ আধিকারিক প্রতারিতকে শাসাতে শুরু করে। কায়দা করে তাঁর থেকে তাঁর বিভিন্ন নিজস্ব তথ্য যেমন নাম, আধার নাম্বার, ঠিকানা, মায়ের নাম, জন্মের তারিখ প্রভৃতি জেনে নেওয়া হয়। সেই অসহায় ব্যাক্তি ভয়ের চোটে সমস্ত তথ্যই জানিয়ে দেয়।

এরপর আরও জানানো হয় এই ব্যাক্তির আধার নাম্বার দেশের 12 থেকে 15টি রাজ্যে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত। এমনকি আন্ডারওয়ার্ল্ড ডনের সঙ্গেও এর কোনো লিঙ্ক রয়েছে। প্রতারিত জানায় সে নির্দোষ, কিন্তু স্ক্যামাররা উল্টে তাকে CBI এর নামে একটি নকল নোটিশ পাঠিয়ে দেয়। এখানেই শেষ নয়, এরপর তাদের মধ্যে একজনের পরিচয় দেওয়া হয় DCP হিসাবে এবং তিনি জানান তাঁরা কিছু ব্ল্যাক মানি পেয়েছে এবং এর সঙ্গেও সেই নির্দোষ প্রতারিত ব্যাক্তির সংযোগ রয়েছে।

ভয়ের পর শাসানি

ভয় দেখানোর পর প্রতারিত ব্যাক্তিকে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের 85% টাকা Melody Professional নামের একটি অ্যাকাউন্টে জমা করতে বলা হয়। ভয়, দুশ্চিন্তা এবং ঘাবড়ে গিয়ে তিনি 2.62 লক্ষ টাকা ঠগদের কথা অনুযায়ী ট্রান্সফার করে দেন।

টাকা পাঠানোর পর দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত তিনি “কাস্টম অফিসার”দের কল বা ম্যাসেজের জন্য অপেক্ষা করেন। কিন্তু অনেকক্ষণ পরেও যখন কোনো কল আসে না তখন তিনি বুঝতে পারেন তাঁর সঙ্গে স্ক্যাম হয়ে গেছে। তিনি কোলাবা থানায় গিয়ে সমস্ত ঘটনার কথা জানিয়ে অভিযোগ করেন। আপাতত পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত শুরু করা হয়েছে, তবে সেই ব্যাক্তির টাকা ফেরত পাওয়া যাবে কি না সেই বিষয়ে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।

অনলাইন ফ্রড থেকে বাঁচার উপায়

  • এই ধরনের কোনো কল এলে ঘাবড়াবেন না।
  • প্রথমে যারা কল করেছে তাদের পরিচয় জানুন।
  • ফোনে কোনো ব্যাক্তিকে নিজের ব্যাক্তিগত ডিটেইলস শেয়ার করবেন না।
  • ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, আধার নাম্বার এবং ওটিপির মতো সেন্সিটিভ ডিটেইলস কাউকে জানাবেন না।
  • যে ডিপার্টমেন্টের নাম করে কল করা হয়েছে নিজে সেখানে যোগাযোগ করুন।
  • কোনো কারণে সন্দেহ হলে তৎক্ষণাৎ সাইবার ক্রাইম সেল এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here