Pegasus, এই নামটি অবশ্যই শুনেছে হয়তো। নিউজ চ্যানেল হোক বা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, চলতি দিনে ইন্ডিয়াতে এর নাম চর্চায় আছে। এই নামটি সরকারের মধ্যে হইচই কথে রেখেছে আর Apple iPhone থেকে শুরু করে Android Smartphone Brands ও ভয় পেয়ে আছে। এই নামের কারনে Facebook অধিকৃত Whatsapp কে আবারো প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। পুরো দেশের সমস্যা হওয়া পেগাসস কি, কেন এই নামের চর্চা হচ্ছে আর এটি কিভাবে কাজ করে? যদি আপনার মনেও এরকম কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে আমরা আগে Pegasus Spyware সম্পর্কে সবকিছু বিস্তারিত ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেছি যা আপনার অবশ্যই দেখা উচিত।
Pegasus কি ?
পেগাসস আসলে একটি কাল্পনিক জন্তু যা ঘোড়ার মতো দেখতে আর এর ডানাও আছে। কিন্তু আমরা এখানে যে Pegasus এর কথা বলছি সেটি একটি Spyware। সবার আগে আপনাকে বুঝিয়ে দিই যে স্পাইওয়্যার একটি এমন সফটওয়্যার যা ফোনকে হ্যাক করে তার সাহায্যে গোয়েন্দাগিরি করে। Pegasus Spyware এর নির্মাণ ইজরায়েলি টেকনোলজি ফার্ম NSO করেছিল যা প্রথম বার আগস্ট 2018 তে বিশ্বের সামনে এসেছিল। এনএসও দ্বারা এই সফটওয়্যারকে বহু সংগঠন এবং দেশকে বিক্রি করা হয়েছে।
Pegasus কিভাবে কাজ করে ?
পেগাসস স্পাইওয়্যার একটি এমন সফ্টওয়্যার যা ফোনে ঢোকার পরে পুরোপুরি নিজের কন্ট্রোলে নিয়ে নিতে পারে। এই স্পাইওয়্যার প্রোগ্রাম স্মার্টফোনে দিয়ে দিলে ডিভাইসের Microphone, Camera, Audio, Video, Text, SMS,E-Mail, Locations আর Notifications এর অ্যাক্সেস নিয়ে নেয় আর এই সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য নিজের সার্ভারে পাঠাতে থাকে।
বলা হচ্ছে যে Pegasus Spyware কল শুনতে আর টেক্সট পড়ার সাথেই Encrypted অডিও আর টেক্সট ফাইলও রিড করার ক্ষমতা রাখে। আবার পেগাসস এর সবচেয়ে বড়ো ফিচার হলো যে এটিকে ফোনে দেওয়ার পরে হ্যাকার বহু দূরে থাকলেও সেই ফোনের ক্যামেরা বা মাইক অন করতে পারবে আর ইউজার্সরা জানতেও পারবে না যে তাদেও উপরে এভাবে গোয়েন্দাগিরি পরা যাবে।
Pegasus সম্পর্কিত বিবাদটি কি ?
পেগাসস স্পাইওয়্যারকে তৈরি করা কোম্পানির দাবি যে এই সফ্টওয়্যারকে তখনই কোনো সরকারকে বিক্রি করে যখন এর ব্যবহার অপরাধ অথবা সন্ত্রাসবাদের বিরোধে করা হয়। কিন্তু অন্যদিকে বিগত বছর গুলিতে Pegasus এর ভুল ব্যবহার করার খবরও সামনে এসেছে। WhatsApp এর মালিক কোম্পানি Facebook এই স্পাইওয়্যার এর নির্মাতার উপরে কেস করেছে আবার ইন্ডিয়াতেও হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে এই সফ্টওয়্যারকে অ্যাক্টিভ করার কথা সামনে এসেছে। বলে দিই যে মেক্সিকো এবং সৌদি আরবের সরকারের উপরেও পেগাসস স্পাইওয়্যার এর ভুল ব্যবহার করার আরোপ লেগেছে।
Pegasus ফোনে কিভাবে এন্ট্রি করে
এই গোয়েন্দাগিরি করা সফ্টওয়্যার এর আপনার ফোনে ঢোকার জন্য কোনো আলাদা কিছুর প্রয়োজন হয় না। হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেজ, এসএমএস বা অন্য কোনো সোশ্যাল মিডিয়ার চ্যাট বক্সের মাধ্যমেও Pegasus Spyware যেকোনো মোবাইল ফোনে ঢুকে যায়। অজানা লিঙ্ক এবং ওয়েবসাইটে গেলেও হ্যাকাররা এই সফ্টওয়্যার থেকে আপনার ফোনকে নিশানা বানাতে পারে। হোয়াটসঅ্যাপের এন্ড-টু-এন্ড এন্ক্রিপ্টেড চ্যাটকে অ্যাক্সেস করার ক্ষমতা এটিকে আরো বেশি বিপদজনক বানায়।
Pegasus Spyware এর থেকে কিভাবে বাঁচবেন
পেগাসস আপনার ফোনে ঢুকে প্রায় প্রত্যেক ফিচারে ক্ষতি করতে পারে। এই সফ্টওয়্যার থেকে বাঁচার জন্য সবার আগে অজানা লিঙ্ক এবং ওয়েবসাইট ওপেন করা বন্ধ করুন। আবার ফোনে থাকা অ্যাপ, সফ্টওয়্যার এবং গেমকে সময়ে সময়ে আপডেট করাও ভালো, ককারন কিছু ডেভলপার্স এই আপডেটের জন্য সিকিউরিটি লেভেল স্ট্রং করে। আবার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং চ্যাটিং অ্যাপ পাসওয়ার্ড প্রোটেকশন আর সন্দেহজনক পেজ এবং গ্রুপ থেকেও দূরে থাকা ভালো। সন্দেহজনক ম্যাসেজ এবং লিঙ্ক নিজে ওপেন করবেন না আর অন্য কাউকে পাঠাবেনও না।
আমাদের ফেসবুকে ফলো করার জন্য এখানে ক্লিক করুন