ভারতে Airtel এবং Vodafone-Idea নিজের প্রিপেইড রিচার্জ প্ল্যানের দাম অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। ইউজারদের 20 টাকা থেকে শুরু করে 501 টাকা পর্যন্ত বেশি দিতে হবে। শোনা যাচ্ছে যে খুব শীঘ্রই জিও কোম্পানিও তার রিচার্জের দাম বাড়াতে চলেছে। এত টাকা দাম বাড়ার প্রভাব সরাসরি ইউজারদের উপরে পড়তে চলেছে। এখন প্ল্যান গুলির দাম বাড়ার পরেও ইউজাররা রিচার্জ তো অবশ্যই করবে কিন্তু একটি প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। কোম্পানি গুলি তাদের ট্যারিফ প্ল্যান গুলির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে তা এখন কি তাহলে 28 দিনের বদলে কি তারা সেটিকে বাড়িয়ে 30 দিনের করে দেবে, যাতে ইউজারদের অল্প স্বস্তি পায়। এখন কোম্পানি গুলি মান্থলি প্ল্যান বলে প্রিপেইড রিচার্জে 28 দিনের ভ্যালিডিটি দেয়। কিন্তু এখন কিছু প্ল্যানে 30 দিনের ভ্যালিডিটি পাওয়া যায় কিন্তু সেগুলি সাধারনের তুলনায় একটু বেশি দামি। এমতাবস্থায় ARPU বাড়ানোর কথা বলে যখন কোম্পানি গুলি নিজের প্ল্যানের দাম বাড়িয়েছে তাহলে তাদের এই প্ল্যান গুলিতে 28 দিনের বদলে 30 দিনের ভ্যালিডিটি দেওয়া উচিত।
কেনো দেওয়া হয় 28 দিনের ভ্যালিডিটি
আমরা মাসের কথা বললে 30 দিনের কথা বলি কিন্তু কিছু মাস 31 দিনের হয় আবার একটি 28 অথবা 29 দিনের হয়, কিন্তু লোকেরা 30 দিনের মাস ধরেই চলে। কিন্তু যখন মাসকে সপ্তাহে হিসাব করি তখন সাধারণত 4 সপ্তাহকে একমাস বলা হয় যা 28 দিন হয় এবং মোবাইল পরিষেবা প্রদান করা কোম্পানি গুলি এটিকেই প্রিপেইড রিচার্জ প্ল্যানের ভ্যালিডিটি বানিয়ে দিয়েছে। ভারতীয় মোবাইল অপারেটররা দুই-তিন দিনকে যোগ করে এক বছরে পুরো এক মাস বাঁচিয়ে নেয় এবং ইউজারকে দিয়ে এক মাসের অতিরিক্ত রিচার্জও করিয়ে নেয়।
এক বছরে 12 এর বদলে 13 মাসের রিচার্জ করানো হয়
এক বছরে 12 মাস হয় কিন্তু এই কোম্পানি গুলি ইউজারের থেকে 13 মাসের রিচার্জ করিয়ে নেয়। এখন আপনিও হয়তো এটি ভাবছেন যে এই অঙ্কটি কত সহজ। যদি 12 মাসে 2 দিন বেঁচে যায় তাহলে 24 দিন হয়, কিন্তু কিছু মাসে 31 দিনও হয়, আর সেখানে 3 দিন বেঁচে যা, তাহলে এখন আপনি বুঝে গেছেন যে শুধুমাত্র 2 দিন বাঁচলে কত ক্ষতি হয়। যদি আপনি 365 দিনের বছর এবং 28 দিনের মাস হিসেব করেন তাহলে 365/28= 13.04 মাস হয়ে যায়। এই ভাবেই অপারেটররা বছরের 12 মাসকে 13 মাসে বদলে দেয়।
অপারেটরদের কত লাভ হয়
এক মাস বাঁচিয়ে অপারেটরা কয়েক কোটি টাকা লাভ করে। চলুন এই অঙ্কটিও দেখে নিই। ভারতে মোবাইল পরিষেবা প্রদাতারা মোবাইল রিচার্জের জন্য ইউজার প্রতি 140 টাকা প্রতি মাসের হিসেবে খরচ করে। এটিকে ARPU বলা হয়। এরপিইউ অর্থাৎ অ্যাভারেজ রেভেনিউ পার ইউজার। এমতাবস্থায় JIO এর উপভোক্তা সংখ্যা 42 কোটিরও বেশি। আবার Airtel এর কাছেও 35 কোটির বেশি উপভোক্তা আছে এবং Vodafone Idea এর কাছে 28 কোটির বেশি উপভোক্তা আছে। এমতাবস্থায় কোম্পানি গুলির উপভোক্তা হিসেবে 140 টাকা গুন করলে Jio (42,00,00,000 × 140 रु = 58,00,00,00,000) অর্থাৎ 5,800 কোটি টাকার বেশি লাভ এক মাসের অতিরিক্ত রিচার্জে হয়। এই ভাবেই Airtel এর দেখলে (35,00,00,000 × 140 रु = 49,00,00,00,000) 4,900 কোটি টাকার বেশি এবং Vodafone Idea (28,00,00,000 × 140 रु = 39,00,00,00,000) 3,900 কোটি টাকার বেশি লাভ শুধুমাত্র একটি অতিরিক্ত মাসের রিচার্জের মাধ্যমে করে। আপনি এখন ভাবছেন যে ইউজারদের জন্য শুধুমাত্র দুইদিন কোম্পানি গুলির কাছে একটি অতিরিক্ত মাসের রিচার্জে কত বড়ো সংখ্যার লাভের মাধ্যম হয়ে দাড়ায়।
তাহলে কি এখন হওয়া উচিত 30 দিনের প্ল্যান
এই হিসেব গুলো তো তখনের যখন কোম্পানি গুলি রিচার্জ প্ল্যানের দাম বাড়ায়নি। কিন্তু এখন যখন প্ল্যান গুলির দাম যখন বাড়িয়ে দিয়েছে তাহলে কি 28 দিনের প্রিপেইড প্ল্যান গুলিকে 30 দিনের করে দেওয়া উচিত। একটি ছোট প্ল্যানের কথা বলি 79 টাকার প্ল্যান ছিলো সেটিকে এখন 99 টাকার করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ 20 টাকা প্রতি মাসে বেশি দিতে হবে। এমতাবস্থায় বছরে দেখলে 20 × 12 অর্থাৎ 240 টাকার অতিরিক্ত রিচার্জ করতে হবে। এমতাবস্থায় ভারতীয় মোবাইল পরিষেবা প্রদান করা কোম্পানি গুলির উচিত নৈতিকতা দেখিয়ে প্রিপেইড প্ল্যান গুলির ভ্যালিডিটি 30 দিন করে দেওয়া।
আমাদের ফেসবুকে ফলো করার জন্য এখানে ক্লিক করুন