2025 সালের স্মার্টফোনে পাওয়া যাবে এই 7টি ফিচার, দেখে নিন লিস্ট

দেখতে দেখতে 2024 সাল প্রায় কেটাই গেল। আর কিছু দিন পরেই 2025 শুরু হতে চলেছে এবং এখন থেকেই মোবাইল জগতে নতুন বছরের টেকনোলজি সম্পর্কে সমালোচনা শুরু হয়ে গেছে। কোন কোন ফোন লঞ্চ হবে, কি ধরনের ক্যামেরা পাওয়া যাবে, কোন প্রসেসর সবচেয়ে শক্তিশালী হবে- এই ধরনের বিভিন্ন প্রশ্নে এখন বাজার গরম হয়ে রয়েছে। তাই এই পোস্টে 2025 সালে আসন্ন 7টি অ্যাডভান্স ফিচার সম্পর্কে আলোচনা করা হল।

2025 সালে 7টি টেকনোলজি থাকবে সমালোচনার শীর্ষে

1) বাজেট ফোনেও AI

2024 সাল থেকেই স্মার্টফোনে AI নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা হয়েছে, তবে 2025 সালে এই ফিচার আরও ছেয়ে যাবে। কারণ একদিকে যেমন দামী ফোনে ক্যামেরা, ফটো ও ভিডিও এডিটিং, লাইভ ট্রান্সলেশন, সিকিউরিটি, ব্যাটারি ম্যানেজমেন্ট এবং অ্যাপ ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে এআই এর ব্যাবহার বাড়তে চলেছে। তেমনই আবার 2025 সালে বাজেট ফোনের ক্ষেত্রেও যথেষ্ট AI ইন্টিগ্রেশন পাওয়া যাবে। আগামী বছর থেকে কম দামের ফোনেও ক্যামেরা থেকে শুরু করে গেমিং, ব্যাটারি, সার্চ ও ট্রান্সলেশন সহ বিভিন্ন সেগমেন্টে AI ব্যাবহার করা যাবে। এমনকি বহু ফোনের নামেও AI থাকবে।

2) 6,000mAh এর চেয়ে বড় ব্যাটারি

আজকের দিনে দাঁড়িয়ে 6,000mAh ব্যাটারি অত্যন্ত সাধারণ হয়ে গেছে। অথচ মাত্র 2 বছর আগেও এত বড় ব্যাটারি হাতে গোনা কিছু ফোনেই পাওয়া যেত। বর্তমানে মিড ও লো রেঞ্জ ফোনে 6,000mAh ব্যাটারি থাকলেও আগামী বছর থেকে দামী ফোনেও এই বড় ব্যাটারি পাওয়া যাবে। এর পেছনে মূল কারণ হল নতুন ব্যাটারি টেকনোলজি।

আগে ব্যাটারির জন্য শুধুমাত্র লিথিয়াম পলিমার বা লিথিয়াম আয়ন টেকনোলজি ব্যাবহার করা হত। তবে বর্তমানে সিলিকন এবং গ্রাফিনের মতো নতুন ব্যাটারি টেকনোলজির ব্যাবহার শুরু হয়েছে। এই নতুন টেকনোলজির দৌলতে ব্যাটারি আগের চেয়ে যথেষ্ট হালকা এবং পাতলা হয়ে গেছে। অর্থাৎ এখন থেকে বড় ব্যাটারি থাকলেও ফোন হালকা এবং পাতলা থাকবে। তাই 2025 সালে 6,000mAh এর চেয়েও বেশি ক্যাপাসিটির ব্যাটারি দেখা যাবে।

তবে এক্ষেত্রে সরকারি অনুমোদনের সমস্যা হতে পারে। কারণ ভারত সরকারের পক্ষ থেকে মোবাইল ফোনে 6,000mAh এর চেয়ে বড় ক্যাপাসিটির ব্যাটারি ব্যাবহারের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম জারি করা হয়েছে। তাই স্মার্টফোন প্রস্ততকারি কোম্পানিগুলির কিছু আইনি সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

3) Wi-Fi 7

দিন দিন ওয়াইফাই এর ক্রেজ বেড়েই চলেছে। এখনও বেশিরভাগ ফোনে 2.4 গিগাহার্টস এবং 5 গিগাহার্টস ওয়াইফাই সাপোর্ট পাওয়া যায়। যাদের ফোনে এই টেকনোলজি রয়েছে তাঁরা আজকের দিনে দাঁড়িয়ে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছেন। কারণ বর্তমানে অনেক লেটেস্ট ফোনে ওয়াইফাই 6 সাপোর্ট পাওয়া যায় এবং 2025 সালে আরও উন্নত ওয়াইফাই 7 টেকনোলজি আসতে চলেছে। 2024 সালেই স্যামসাঙ এবং অ্যাপেল ফোনে এই টেকনোলজি যোগ করা হয়েছে। একইসঙ্গে এই প্রযুক্তি দেখা গেছে এসার, ডেল ও আসুস ল্যাপটপে। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই 2025 সালে মার্কেটে বেশি ফাস্ট এবং সিকিওর ওয়াইফাই 7 ছেয়ে যেতে চলেছে।

4) স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন

আইফোন 15 থেকে অ্যাপেল ফোনে স্যাটেলাইট ক্মনিউনিকেশ্ন সার্ভিস দেওয়া হয়েছে। এরপর স্যামসাঙ গ্যালাক্সি এস24 আলট্রা ফোনেও এই সার্ভিস দেখা গেছে। বিশেষ করে এই টেকনোলজির দৌলতে এই ফোনটি জনগণের দৃষ্টিতে বেশি করে ছেয়ে রয়েছে। 2025 সালে অন্যান্য অনেক ফোনেই এই টেকনোলজি দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

5) কম্প্যাক্ট এবং হালকা ফোন

আজকের দিনে দাঁড়িয়ে স্মার্টফোনের স্ক্রিন সাইজ অনেকটাই বড় হয়েছে। 2024 সালে বেশিরভাগ ফোনে 6.5 ইঞ্চির চেয়ে বড় স্ক্রিন যোগ করা হয়েছে। এর ফলে ফোনের ওজনও বেড়েছে। তবে বর্তমানে ইউজাররা ছোট ও হালকা ফোন পছন্দ করছেন। মূলত 150 গ্রামের কাছাকাছি ওজনের ফোন, যা সহজে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ধরা ও ব্যাবহার করা যায় সেগুলির প্রতি মানুষ বেশি ঝুঁকতে শুরু করেছে।

তাই 2025 সালে কম্প্যাক্ট ও হালকা ফোনের রমরমা দেখা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। আগে ফোন ভারি হত মূলত ব্যাটারি এবং স্ক্রিনের জন্য। তবে বর্তমানে সিলিকন ও গ্রাফিন ব্যাটারি এবং পিওএলইডি ব্যাটারির দৌলতে ফোন অনেকটাই হালকা হয়েছে। আগামী বছর বিভিন্ন কোম্পানি হালকা, পাতলা ও কম্প্যাক্ট ফোনের ওপর জোর দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

6) বাজেটে টেলিফটো ক্যামেরা

যে কোনো স্মার্টফোনের ক্যামেরা সেগমেন্ট ইউজারদের অন্যতম পছন্দের একটি দিক। এই সেগমেন্টেই আজ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ইনোভেশন দেখা গেছে। সাধারণত টেলিফটো লেন্স দামী ফোনেই দেখা যায় এবং স্যামসাঙ, অ্যাপেল ও ভিভো এই লেন্স নিয়ে ভালোই কাজ করেছে। তবে 2025 সালে মিড সেগমেন্ট ও বাজেট ফোনেও এই লেন্স দেখা যাবে। ইউজাররা 15 হাজার থেকে 20 হাজার টাকার ফোনেও টেলিফটো লেন্স উপভোগ করতে পারবেন। এর ফলে ক্যামেরার জুম ও পোর্ট্রেট ক্যাপাবিলিটি অনেক অ্যাডভান্স হয়ে যাবে এবং ইউজাররা লসলেস জুম ফিচার পাবেন।

7) কোয়াড কার্ভ স্ক্রিন

কার্ভ ডিসপ্লে ফোনের প্রিমিয়ামনেস বাড়িয়ে তোলে। এতদিন বাজারে শুধুমাত্র দুই সাইডে কার্ভ সহ স্ক্রিনের রমরমা দেখা গেছে। তবে 2025 সালে বিভিন্ন ফোনে কোয়াড কার্ভ ডিসপ্লে দেখা যাবে। অর্থাৎ এইসব ফোনে দুই সাইদের পাশাপাশি ওপর ও নিচেও কার্ভ থাকবে। আগামী বছর টেক জগতে এই টেকনোলজিও যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here