এই পদ্ধতি অবলম্বন করে বাড়ানো যাবে নিজের মোবাইলে পাওয়ার সহ স্পীড, পুরোনো ফোনও হয়ে উঠবে একদম নতুনের মতো

এরকম বহু মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী আছে, যারা চায় যে একটি নতুন ফোন কেনার পর সেটা যেনো অন্তত 3 থেকে 4 বছর চলে এবং তার আগে যেনো কোনো আর নতুন ফোন কিনতে না হয়। এই সমস্ত মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষরা ফোনের পিছনে বার বার পয়সা খরচ করতে পছন্দ করে না, বরং তারা একবার কোনো ভালো ফোন কেনার পর কয়েক বছর আর কোনো ফোনে খরচ করে না। স্মার্টফোন কেনার সময় আমরা কিছু এক্সট্রা টাকা খরচ করি, এই ভেবে যাতে সেটি দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ভালো ভাবে কাজ করে। কিন্তু এটাও সত্যি যে কিছু বছর ব্যবহার করার পর ফোন স্লো হতে শুরু করে, এবং ফোনটি আগের মত কাজ করা বন্ধ করে দেয়।

যদি আপনার ফোনে বা আপনার বাড়ির কোনো ফোন এই অবস্থায় এসে পৌঁছায়, যে সেটি পুরোনো হয়ে গেছে এবং আগের মত কাজ করছে না তাহলে আজকে এই আর্টিকেলে দেওয়া টিপস গুলি আপনার অনেক কাজের হয়ে উঠতে চলেছে। সময়ের সাথে সাথে মোবাইল ফোনের প্রোসেসিং সিস্টেম স্লো হতে শুরু করে বা ধীর গতিতে কাজ করতে শুরু করে। অ্যাপ ওপেন হওয়া‌র স্পিড ধীর হয়ে যায়, টাচ স্ক্রিনে অসুবিধা দেখা দেয় এবং হ‍্যাং হয়ে যাওয়া‌র মত কিছু সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। কিন্তু আপনার স্মার্টফোন যতই পুরনো হোক, এমন কিছু পদ্ধতি আছে যার সাহায্যে আপনার ফোন আগের মতো চলতে বা কাজ করতে শুরু করে দেবে। এই পদ্ধতি বা টিপস গুলি ফলো করলে পুরনো ফোনও নতুন ফোনের মতো কাজ করতে শুরু করবে।

1) Factory Reset

ফ্যাক্টরি রিসেট হলো ফোনের এমন একটি ওষুধের মতো, যা ফোনের বহু সমস্যা‌র সমাধান করতে পারে। স্মার্টফোনকে আগের মতো দ্রুত, স্মুথ বা নতুনের মতো কাজ করানোর জন্য সবথেকে ভালো পদ্ধতি হলো Factory Reset। এই পদ্ধতি ব্যবহার করার পর আপনার ফোনটি আগের মতো নতুন হয়ে যাবে। ফোনের প্রোসেসিং দ্রুত হয়ে যায়, সব কাজ দ্রুত হবে বা অ্যাপ ওপেন হওয়া থেকে টপ ফিচারস পর্যন্ত সব কিছুই দ্রুত গতিতে হবে। আপনাদের বলে দিই যে ফোন রিসেট করার পর সব পুরোনো ফাইলস ডিলেট হয়ে যায় এবং সিস্টেম ফাইল আর অ্যাপ্লিকেশন ফাইল আবার নতুনের মতো হয়ে যাবে।

Smartphone reset করার আগে আপনার মোবাইলের ডেটা ব্যাকআপ করে নেওয়া প্রয়োজন। যদি আপনি চান যে আপনার মোবাইল ফোনের সব কিছু উপস্থিত থাকুক, তাহলে অ্যাপস, ফোটো, ভিডিও এবং অন্যান্য ফাইলসের Data Backup করে নেওয়া একান্তই আবশ্যক। ফোন ব্যাকআপ স্মার্টফোনে থাকা মাইক্রোএসডি কার্ড অথবা Googl-এ স্টোর করে রাখা যেতে পারে, এই সবের মাধ্যমে ফোনটিকে Factory reset মারার পরেও আবার পুনরায় Recover করা যেতে পারে।

2) Android Update

অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন গুলি Google-এর বানানো Android OS-এ রান করে। এই কোম্পানিটি প্রতি বছর নিজেদের অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের নতুন ভার্সন পেশ করে এবং সেখানে নতুন বহু আপডেট থাকে। শুধু এটাই নয় বরং কিছু সময় অন্তর অন্তর Android OS-এর নতুন আপডেটও জারি হতে থাকে। বেশিরভাগ লোক ভাবে, যে এই অ্যান্ড্রয়েড আপডেট ফোনে শুধু স্টোরেজ বাড়ানোর কাজ করে, তাই এই নতুন অ্যান্ড্রয়েড আপডেট ফোনে ডাউনলোড করে না।

কিন্তু আপনাকে বলে দিই, যে এই Android OS-এর নতুন আপডেটে শুধু নতুন ফিচারস দেওয়া হয় না বরং এর সাথে বাগসের সঙ্গে লড়াই করার শক্তিও প্রদান করা হয়। বিভিন্ন অ্যাপস, ওয়েবসাইট, গেমস, অনলাইন অ্যাক্টিভিটি এবং ইন্টারনেট অ্যাকসেসের থেকে কিছু বাগস ঢুকে যায় আপনার ফোনে, এবং সেইগুলি ফোনের প্রোসেসিঙে এক্সট্রা লোড দেয়। এই বাগস শুধু প্রোসেসিং কেই স্লো করে না বরং অ্যাপ গুলিকে ইনফ্লুয়েন্সও করে। অ্যান্ড্রয়েড আপডেটে ডেভেলপাররা এই বাগ গুলিকে শেষ করার কোড‌ প্রদান করে। এই জন্যেই আপনার ফোন সবসময় লেটেস্ট অ্যান্ড্রয়েড ভার্সনে আপডেট থাকা প্রয়োজন।

3) RAM Memory

মোবাইলে যখনই কোনো অ্যাপস ডাউনলোড করা হয়, সেটি ফোনের ইন্টারনাল মেমোরীতে স্টোর হয়ে যায়। এই অ্যাপের নতুন ফাইলস RAM বা Random Access Memory তে ক্রিয়েট হয়। আজকাল 6GB RAM এবং 8GB RAM-এর স্মার্টফোন মার্কেটে লঞ্চ হতে শুরু করেছে, কিন্তু আপনার ফোন যদি পুরোনো হয় তাহলে সেখানে 2GB RAM বা 3GB RAM থাকতে পারে। অন্যদিকে মার্কেটে এমনও অনেক নতুন গেমস বা অ্যাপস আছে, যেগুলির সিস্টেম ফাইলের সাইজ অনেক বড়ো।

এই অ্যাপস বা গেম গুলিকে ফোনে ইন্সটল করার পর, যখনই ব্যবহার করা হয় তখন এই গুলির ফাইলের সাইজও বাড়তে থাকে। এই অবস্থায় আপনার ফোনের RAM-এর জায়গা কমতে শুরু করে, তখন ফোনের প্রসেসিং ধীর গতিতে কাজ করতে শুরু করে এবং ফোনের সমস্ত টাস্ক স্লো হয়ে যায়। এখানে আপনাকে নির্নয় করতে হবে, যেই সমস্ত অ্যাপ গুলি একান্তই প্রয়োজন সেগুলি‌কে রেখে, অন‍্যান‍্য অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ গুলিকে ডিলিট করে দিতে হবে। RAM যত ফ্রী থাকবে ফোন ততো ভালো স্মুথ চলবে।

4) Phone Storage

ফোনের স্টোরেজ ভরা থাকলেও ডিভাইসের প্রোসেসিঙে ব্যাঘাত ঘটে এবং ডিভাইসটিকে স্লো করে দেয়। support.google এর অনুযায়ী, যদি আপনার ফোনের স্টোরেজ 90% ফুল থাকে এবং 10% মাত্র খালি থাকে, তাহলে এইক্ষেত্রে মোবাইল ফোন প্রবলেম করতে শুরু করে। হতে পারে প্রথমে সেরকম কিছুই দেখা যাবে না, কিন্তু কিছু সময় যাওয়ার পরে স্টোরেজ ফুল হতে শুরু করলে ফোন খারাপ পারফরমেন্স দিতে শুরু করবে।

এমতাবস্থায় খেয়াল রাখতে হবে যে কিছু দিন পর পর Phone Storage-এ নজর রেখে ফালতু ফোটোস এবং ভিডিও ফোন থেকে ডিলিট করে দিতে হবে। যদি মিডিয়া ফাইলস ডিলেট করতে না পারা যায়, তাহলে সেগুলি‌র ব্যাকআপ নিয়ে রাখা বেটার অপশন হবে। আপনার মোবাইল ফোনের ফোটোগুলিকে Google-এ সেভ করে রাখতে পারেন অথবা পেনড্রাইভ, ল্যাপটপে সেভ করে রাখতে পারেন। মোটকথা ফোনের স্টোরেজ খালি রাখতে হবে।

5) Lite Android Apps-এর ব্যবহার

লাইট অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ গুলি পুরানো মোবাইলে দ্রুত কাজ করার জন্য সবথেকে ভালো অপশন। এই অ্যাপ গুলি ফোনের স্টোরেজ বাড়ায় এবং ইন্টারনেটের ব্যবহারও কম করে। এই অ্যাপ ব্যবহারে ফোনের প্রোসেসিং এবং ব্যাটারির ওপর বেশি লোড পড়ে না। আকর্ষণীয় ব্যাপার হলো, যে Lite Android App গুলি নিজের ফুল ভার্সনের তুলনায় প্রচুর দ্রুত হয়। এমতাবস্থায় উচিত হবে আপনার পুরোনো মোবাইল ফোনে এই অ্যাপ গুলি ডাউনলোড করে নেওয়া।

এই লাইট অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ গুলি কম RAM এবং পুরনো প্রসেসরে স্মুথ এবং ল‍্যাগ ফ্রি ভাবে কাজ করে। কিছু লাইট অ্যাপের নাম বলা হলে, সেগুলি যথাক্রমে-Gmail Go, Google Go, YouTube Go, Maps Go এর সাথে Facebook Lite, Messenger Lite, Instagram Lite, Twitter Lite, LinkedIn Lite, Spotify Lite এবং Skype Lite এই সমস্ত অ্যাপ গুলি আপনার কাজে ব‍্যবহৃত হতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here