Android স্মার্টফোনে OS এবং UI এর ভূমিকা কি? জেনে নিন বিভিন্ন ব্র‍্যান্ডে‌র ওএস সম্পর্কে

স্মার্টফোন মার্কেটে প্রত‍্যেক‌টি ব্র‍্যান্ড নিজেকে অন‍্যের তুলনায় শ্রেষ্ঠ বলে। যখন কোনো গ্রাহক স্মার্টফোন কেনার কথা ভাবে, তখন সবথেকে বড়ো প্রশ্ন হয়ে দাড়ায় এক‌ই প্রাইস সেগ্মেন্টে Design, Display, RAM, Storage, Camera, Processor এবং Battery এর মতো সব স্পেসিফিকেশন্স এক রকম হ‌ওয়া সত্ত্বেও স্মার্টফোন গুলি আলাদা হয় কি করে? ব্র‍্যান্ডের নাম আলাদা হ‌ওয়ার সাথেই যে জিনিস‌টি এই স্মার্টফোন গুলিকে প্রত‍্যেকের থেকে ভিন্ন করে তাহল OS অর্থাৎ অপারেটিং সিস্টেম। প্রত‍্যেক‌টি মোবাইল ব্র‍্যান্ড চেষ্টা করতে থাকে তাদের স্মার্টফোন‌কে অন‍্যান‍্য কোম্পানির তুলনায় শ্রেষ্ঠ করে তোলার। স্মার্টফোন গুলি শ্রেষ্ঠ হয়ে ওঠে ফোনে‌র অপারেটিং সিস্টেমে‌র মাধ্যমে। প্রত‍্যেক‌টি ব্র‍্যান্ড নিজের ইউনিক ওএসে কাজ করে, যেমন OPPO এর ColorOS, Samsung এর OneUI, OnePlus এর OxygenOS, Xiaomi এর MiUi, Vivo এর FunTouch এবং Realme এর RealmeUI অপারেটিং সিস্টেম। এই সমস্ত অপারেটিং সিস্টেমের ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য আছে, যা স্টক অ্যান্ড্রয়েড‌কে আর‌ও আকর্ষণীয় করে এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি করে তোলে। আসুন এই আর্টিকেলে‌র মাধ্যমে জেনে নিই Android 12 এর সাথে কাজ করা এই সমস্ত OS এর বৈশিষ্ট্য।

OPPO ColorOS

সবচেয়ে এডভান্স অপারেটিং সিস্টেমে‌র কথা বলা হলে যেই নামটি আসে, সেটি হলো ওপ্পো কোম্পানির পেশ করা কালার‌ওএস 11 এর নাম। ColorOS 11 অপারেটিং সিস্টেম স্মার্টফোনে Android 11 এর সাথে কাজ করতে সক্ষম। কালার‌ওএস 11 এর মাধ্যমে ফোনে র‍্যামের ব‍্যবহার 45 শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। রেসপন্স রেটে 32 শতাংশ এবং ফ্রেম রেট স্টেবেলিটিতে 17 শতাংশ দ্রুততা চলে আসে। ওএসে উপস্থিত Personalization ফিচারে ফোনের থিম, ওয়ালপেপার, ফন্ট, আইকন, কালার, লে‌-আউট ইত্যাদি নিজের ইচ্ছানুযায়ী সেট করা যাবে। ওএসে ইউজাররা শুধুমাত্র আইকন স্টাইল‌ই বদলাতে পারবে না, তার সাথে ‘App Layout’ ফিচারে নিজের কম্ফর্ট অনুযায়ী স্ক্রিনে কত গুলি কলাম এবং কত গুলি রো রাখতে চায়, সেটিও নিজের পছন্দের মতো সেট করতে পারবে। এইভাবেই নিজের ইচ্ছানুযায়ী কালার‌ও বদলানো যাবে। অল‌ওয়েজ অন ডিসপ্লে‌র মতো ফিচার ফোন এক্সপেরিয়েন্স‌‌কে আর‌ও অসাধারণ করে তোলে। কালার‌ওএস 11 এর মাধ্যমে ট্রান্সলেশন‌ও খুব সহজ হয়ে গেছে। এই নতুন অপারেটিং সিস্টেম‌টিতে 3 ফিঙ্গার টাচ এবং ট্রান্সলেশনের মতো অসাধারণ অপশন‌ও পাওয়া যাবে। ওপ্পো এই অপারেটিং সিস্টেমে প্রাইভেসি‌কে আগের তুলনায় যথেষ্ট সিকিউর করে দিয়েছে।

Samsung OneUI

স‍্যামসাং এর অপারেটিং সিস্টেমে‌র সবচেয়ে লেটেস্ট ভার্সন হলো ওয়ান‌ইউআই 4। এই নতুন অপারেটিং সিস্টেমে ইম্প্রুভ্ড ডার্ক মোড সহ প্রি ভিডিও মোড, অডিও বুকমার্ক এবং ওয়াইফাই পাসওয়ার্ডের মতো ফিচার দেওয়া হয়েছে। স‍্যামসাং ছর ওয়ান‌ইউআই সিস্টেমের বিশেষ ফিচারের সম্পর্কে কথা বলা হলে এতে Quick Switch এবং Content Suggestion দেওয়া আছে। কুইক সুইচ ফিচারে নর্মাল মোড এবং প্রাইভেট মোড আছে, পাওয়া‌র বাটনটিকে দুইবার চাপলে এই দুটি মোডে পাল্টানো যাবে এবং ইউজাররা গ‍্যালারি, হোয়াটস‌অ্যাপ আর অন‍্যান‍্য অ্যাপের নর্মাল মোড থেকে প্রাইভেট মোডে সুইচ করতে পারবে। আবার কন্টেন্ট সাজেশন ফিচারে স্মার্টফোন ইউজারদের প্রাইভেট কন্টেন্ট‌কে ‘সিকিউর ফোল্ডার’ এ ট্রান্সফার করার পরামর্শ দেবে।

Xiaomi MIUI

শাওমির লেটেস্ট ওএস মিইউআই 12.5। এই ওএসের কিছু বিশেষ ফিচারের কথা বলতে হলে ডার্ক মোড 2.0 কে আর‌ও এডভান্স করে পেশ করা হয়েছে, যা ব‍্যাটারীর ব‍্যবহার কম করে। এর সাথেই অল‌ওয়েজ-অন ডিসপ্লে, গেস্চার এন্ড নেভিগেশন, নোটিফিকেশনের মতো ফিচার গুলি ইউজারদের অসাধারণ এক্সপেরিয়েন্স প্রদান করে। মি‌ইউআই 12 এর ক‍্যামেরা অ্যাপের সাথে লে‌আউট সাপোর্ট‌ সহ কালার কাস্টোমাইজেশান‌ও দেওয়া হয়েছে। স্মার্টফোনটিকে অত‍্যাধিক সিকিউরিটি দেওয়া‌র জন্য মিইউআই 12 ওএসে Mobile AI Computer Engine অর্থাৎ MACE ফ্রেম‌ওয়ার্কের ব‍্যবহার করা হয়েছে। এর সাথেই অ্যাপ বিহেভিয়ারের মতো ফিচার ইউজারদের নিজের প্রাইভেসিকে আর‌ও মজবুত করতে এবং নিজের থেকে হ‍্যান্ডেল করার সুযোগ দেয়।

Oneplus OxygenOS

ওয়ানপ্লাসের পেশ করা সবচেয়ে নতুন অপারেটিং সিস্টেমে‌র নাম অক্সিজেন ওএস 11। এই ওএসটিও অন‍্যান‍্য লেটেস্ট ভার্সনের ন‍্যায় অ্যান্ড্রয়েডের 11 এর সাথে কাজ করে। অল‌ওয়েজ-অন ডিসপ্লে ফিচার‌টিকে অক্সিজেন ওএসেও অসাধারণ পদ্ধতিতে যোগ করা হয়েছে, যেখানে ইউজাররা নিজের ইচ্ছানুযায়ী নিজের ফোনটির ডিজাইন করতে পারবে। এর সাথেই ওয়ান-হ‍্যান্ডেড অপ্টিমাইজেশান, ফোকাস ট‍্র‍্যাকিং এবং গেস্চার শেল্ফের মতো ফিচার গুলি মোবাইল ব‍্যবহার আর‌ও সহজ করে তোলে‌। অক্সিজেন ওএস 11 এও প্রাইভেসি এবং সিকিউরিটি‌র ক্ষেত্রে অসাধারণ সার্ভিস পেশ করা হয়েছে।

Realme UI

রিয়েলমি ফোন গুলি আগে ওপ্পো‌র কালার ওএসেই কাজ করতো, কিন্তু পরবর্তী সময়ে রিয়েলমি ইউজারদের আর‌ও ভালো এক্সপেরিয়েন্স‌ দেওয়ার জন্য কোম্পানি রিয়েলমি ইউআই পেশ করে। Realme UI 3.0 একদম লেটেস্ট ভার্সন। অল‌ওয়েজ-অন ডিসপ্লে, সিস্টেম থিম এবং স্ক্রিন লাইট এফেক্ট ফোনের ইউজার ইন্টারফেসকে আর‌ও আকর্ষণীয় করে। হাই-ব্রাইটনেস কালার এবং হাই-স‍্যাচুরেশান ভিউ সহ কাস্টমাইজেশন এটিকে অসাধারণ করে তোলে। রিয়েলমি ইউআইয়ে Quantum Animation Engine ফিচার‌কে যোগ করা হয়েছে, যা সফ্ট ডিসপ্লে এবং স্মুথ এনিমেশন প্রদান করে। এর সাথেই ফোনে ফোকাস মোড, 3-ফিঙ্গার টাচ, পার্সোনাল ইনফরমেশন প্রোটেকশন এবং পাওয়ার সেভিঙের মতো ফিচার‌ও উপস্থিত আছে।

আমাদের ফেসবুকে ফলো করার জন্য এখানে ক্লিক করুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here