JioPhone Next কে 10 সেপ্টেম্বর ভারতে লঞ্চ করার কথা ছিল কিন্তু কোম্পানি এর লঞ্চ ডেট পিছিয়ে দিয়েছে। এখন এই ফোনটি দীপাবলির কাছাকাছি সময়ে লঞ্চ হবে। এই লঞ্চের পিছিয়ে যাওয়া জিও ফ্যানদের জন্য এটি কোনো ঝাটকার থেকে কম না। বিগত কয়েক মাসে এর সম্পর্কে কথা হচ্ছিল আর প্রাইস এবং স্পেসিফিকেশন্স সম্পর্কে লিক এসে গিয়েছিল। কিন্তু লঞ্চের আগে এরকম সময়ে কোম্পানি এটিকে পিছিয়ে দিলো আর বললো যে “Jio আর Google দুটি কোম্পানি JioPhone Next এর পরীক্ষা সীমিত উপভোক্তাদের সাথে শুরু করে দিয়েছে। দুটি কোম্পানি দীপাবলি উৎসবের সময়ে এটিকে বেশি সংখ্যায় ইউজারদের কাছে উপলব্ধ করানোর জন্য কাজ করছে। আবার এই যে অতিরিক্ত সময় পাওয়া গেলো তার মধ্যে মোবাইল জগতের Global Chip shortage এর সমস্যা থেকেও বাঁচা যাবে।” এমতাবস্থায় ইউজারদের মনে এই প্রশ্ন আসা সাধারণ যে পরীক্ষা তো ঠিক আছে কিন্তু এই Global Chip Shortage কি? এর আগে তো কখনো শুনিনি! তাহলে চলুন আজকে আপনাকে গ্লোবাল চিপ শর্টেজ সম্পর্কে বলা যাক।
কি এই Global chip shortage?
মোবাইল হোক বা গাড়ি বা যেকোনো ইলেকট্রনিক জিনিস তার মধ্যে চিপ থাকে। এই চিপকে আপনি ডিভাইসের হৃৎপিণ্ড, হৃদস্পন্দন বা আত্মা বলতে পারেন। এটি ছাড়া ইলেকট্রনিক ডিভাইস তৈরি হয় না। আবার Shortage এর মানে আপনি বোঝেনই এটি একটি ইংলিশ শব্দ কমতির জন্য ব্যবহার করা হয়। গ্লোবাল চিপ শর্টেজ এটিই। অর্থাৎ বিশ্ব স্তরে বা বলতে পারেন যে সারা বিশ্ব জুড়ে চিপের কমতি হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় মোবাইল চিপ হোক বা গাড়ির চিপ বা খেলনায় লাগা চিপ এর প্রচুর কমতি হয়ে গেছে আর বিশ্ব স্তরে এর চাহিদা আর দামে অনেকটাই বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে।
কেনো হলো Global chip shortage?
Global chip shortage এর সবচেয়ে বড়ো কারন হলো কোরোনা ভাইরাস। কোরোনা ভাইরাসের কারনে বিশ্ব জুড়ে বহু দেশে লকডাউন হয়েছে। বিশেষ করে বড়ো দেশে কোরোনা ভাইরাসের থেকে বাঁচার জন্য বহু দিন পর্যন্ত লকডাউন চলেছে। এই সময়ে ফ্যাক্টারি গুলিও বন্ধ ছিল আর কাজ কর্ম পুরোপুরি বন্ধ ছিলো। এমতাবস্থায় চিপ প্রোডাকশনে অনেকটা খারাপ প্রভাব পড়েছে আর এটিই হলো গ্লোবাল চিপ শর্টেজের বড়ো কারন।
এই বড়ো কারন কোরোনার কারনেই বড়ো সংখ্যায় কোম্পানি গুলি ওয়ার্ক ফ্রম হোমকে প্রোমোট করেছে। এই কারনে বেশি সংখ্যক লোকেরা ঘরে বসে কাজ করছে আর হোম নেটওয়ার্কিং ইকুইপমেন্ট আর কন্জিউমার ইকুইপমেন্ট এর ডিমান্ডও বেড়ে গেছে। এমতাবস্থায় যেখানে আরো একদিকে কন্জিউমারের ডিমান্ড বেড়েছে আবার অন্যদিকে বড়ো ইকুইপমেন্ট নির্মাতারা প্রোডাক্টের বড়ো স্টক করে স্টোর করে নিয়েছে। এই নির্মাতাদের মধ্যে হুয়াইয়ের মতো নাম আছে যারা আমেরিকার প্রতিবন্ধকতা দেখে প্রোডাক্টের বড়ো স্টক স্টোর করে নিয়েছে। এই কারনেই বিশ্ব জুড়ে চিপের কমতি হয়ে গেছে আর এর প্রভাব চিপের চাহিদার সাথে দামেও পড়েছে।
এই সব ছাড়াও ঝড়ের ভূমিকাও আছে গ্লোবাল চিপ শর্টেজে। এই বছর ফেব্রুয়ারিতে Texas এ অনেক বড়ো ঝড় এসেছিল। এর কারনে অস্টিন আধারিত Samsung এর চিপ প্রোডাকশনেও অনেকটা খারাপ প্রভাব পড়েছে আর চিপ ক্রাইসিস এর কারন হয়েছে। শোনা যাচ্ছে যে Samsung বিশ্বের কিছু নির্দিষ্ট কোম্পানির মধ্যে একটি যা চিপ নির্মাণে যুক্ত আর এই কোম্পানির চিপ প্রোডাকশন বিশ্বে সবচেয়ে বড়ো।
Global chip shortage এর প্রভাব শুধুমাত্র মোবাইলে পড়েনি বরং খেলনা, কানেক্টেড গাড়ি, ইলেকট্রিক গাড়ি আর অন্যান্য ইলেকট্রনিক জিনিসেও দেখা গেছে।
আমাদের ফেসবুকে ফলো করার জন্য এখানে ক্লিক করুন