স্মার্টফোনে Screen Refresh Rate এবং Touch Sampling Rate এর কাজ কি জানেন? জেনে নিন উভয়ের পার্থক্য এবং সুবিধা

স্মার্টফোন কেনার সময় আমরা সাধারণত মোবাইলের ডিসপ্লের, র‍্যাম, প্রসেসর, ক্যামেরা এবং ব্যাটারি সম্পর্কে অনেক গবেষণা করে থাকি। ডিসপ্লের কথাই বলতেই মোবাইল ইউজাররা দেখেন ফোনের স্ক্রিন সাইজ কত এবং তার মধ্যে IPS LCD, AMLOED বা OLED- কোন ধরনের প্যানেল দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অনেক গ্রাহক প্রায়ই স্ক্রীন রিফ্রেশরেট এবং টাচ স্যাম্পলিং রেটকে উপেক্ষা করেন। আজকাল টেক ব্র্যান্ডগুলি এই দুটি ফিচারকেই বেশ উন্নত এবং আপডেট করছে এবং স্ক্রিন রিফ্রেশরেট ও টাচ স্যাম্পলিং রেটকে স্মার্টফোনের প্রধান ইউএসপি করে তুলছে। আপনি যদি এই দুটি ফিচারের নাম না শুনে থাকেন বা এই দুটি ফিচার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান, তাহলে আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের জানাবো যে স্ক্রিন রিফ্রেশরেট এবং টাচ স্যাম্পলিং রেট কী? এছাড়াও স্মার্টফোনে স্ক্রীন রিফ্রেশরেট এবং টাচ স্যাম্পলিং রেট এর কি ভূমিকা বা সুবিধা সেটাও আপনাদের জানাবো।

Screen Refresh Rate

স্ক্রীন রিফ্রেশ রেট মানে “এক সেকেন্ডে ডিসপ্লে কতবার রিফ্রেশ হয়”। সহজ কথায়, বললে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ এবং টিভির মতো সমস্ত ডিভাইসের স্ক্রিন প্রতি সেকেন্ডে নিজেকে রিফ্রেশ করে। প্রতিটি রিফ্রেশের সাথে, সেই সময়ে ডিসপ্লেতে থাকা ছবিটিও রিফ্রেশ হয় এবং পরবর্তী ছবিটি দেখায়। এই প্রক্রিয়া ক্রমাগত চলতে থাকে এবং ছবিগুলো একের পর এক দ্রুত রিফ্রেশ হয়। ক্রমাগত ফ্রেম পরিবর্তন করার স্ক্রিনে সেই ছবিটি মোশন রূপে উপস্থিত হয়।

ডিসপ্লেটি প্রতি সেকেন্ডে যেই গতিতে নিজেকে রিফ্রেশ করে, সেই গতিকেই রিফ্রেশরেট এর নাম দেওয়া হয়েছে। এটা স্পষ্ট যে এক সেকেন্ডে ডিসপ্লেটি যত বেশিবার রিফ্রেশ হবে, ডিসপ্লের মধ্যে থাকা ছবি তত দ্রুত গতিতে মোশন এ পরিবর্তন হবে। এই গতিকে Hz পরিমাপ করা হয়। সাধারণত স্মার্টফোনে, আপনি 60Hz, 90Hz এবং 120Hz রিফ্রেশরেট দেখতে পাবেন। এর মানে হল যে স্মার্টফোনের স্ক্রিন 1 সেকেন্ডে 60, 90 বা 120 বার নিজেকে রিফ্রেশ করে।

স্মার্টফোনে রিফ্রেশরেট এর সুবিধা

স্মার্টফোনে ডিসপ্লের রিফ্রেশ রেট আসলে কি সেটা আশাকরি আপনারা ইতিমধ্যেই বুঝতে পেরেছেন। ডিসপ্লের রিফ্রেশরেট যত বেশি হবে, তত দ্রুত ইমেজ রিফ্রেশ করবে এবং পরবর্তী ছবি দেখাবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি একটি ফোনের 120Hz রিফ্রেশরেট থাকে, তাহলে সেই ফোনের স্ক্রীন 1 সেকেন্ডে 120 বার তার ফ্রেম পরিবর্তন করবে। এবার যত দ্রুত ফ্রেম অর্থাৎ ইমেজ পরিবর্তন হবে, ইউজার স্ক্রিনের মোশনকে তত পরিষ্কার, মসৃণ ভাবে দেখতে পারবে। গেমিং, এর পাশাপাশি স্ক্রলিং, অ্যানিমেশন, ট্রানজিশন ইত্যাদি অনেক দ্রুত অনুভব করা যাবে।

Touch Sampling Rate

টাচ স্যাম্পলিং রেট মানে হল “এক সেকেন্ডে ডিসপ্লে কতবার টাচ ইনপুট রিড করে”। আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন যে কীভাবে একটি স্মার্টফোন কীপ্যাড এবং বাটন ছাড়া স্ক্রিনে ট্যাপ করে কাজ করে? এই পুরো প্রসেস এ টাচ স্যাম্পলিং রেট খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্মার্টফোনের স্ক্রিন প্রতি এক সেকেন্ডে বেশ কয়েকবার নিজেকে রিফ্রেশ করে, এবং তাকে স্পর্শ করা হয়েছে সেটা বোঝার চেষ্টা করে। কোন কোন ফোনের ডিসপ্লে এক সেকেন্ডে 60 বার করে, আবার কোন কোন ফোনের ডিসপ্লে এক সেকেন্ডে 120 এমন করে৷ প্রতি সেকেন্ডে অনেকবার স্ক্রিনের এই প্রসেসটাকেই বলে টাচ স্যাম্পলিং রেট।

আরও গভীরে গেলে, এক সেকেন্ডে 60 বার টাচ অনুভব করার অর্থ হল 16.6মাইক্রোসেকেন্ডে একটি টাচ। এইভাবে, যদি স্যাম্পলিং রেট 60Hz থেকে 120Hz-এ বৃদ্ধি করা হয়, তাহলে স্ক্রিনের দ্বারা প্রতিটি টাচ 8.33 মাইক্রো সেকেন্ডে রিড করা হবে। ডিসপ্লে যত দ্রুত এবং বেশি ঘন ঘন রিফ্রেশ হয়ে টাচকে সেন্স করবে, ডিসপ্লে থেকে আঙুলের টাচ মিস হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি থাকবে। যত দ্রুত ডিসপ্লে ইউজারদের টাচ বুঝতে পারবে , তত দ্রুত ডিসপ্লে রেসপন্স দেবে।

স্মার্টফোনে টাচ স্যাম্পলিং রেট এর সুবিধা

ফোনের স্ক্রিনে টাচ করে যেকোনো কমান্ড দেওয়ার প্রক্রিয়ায় টাচ স্যাম্পলিং রেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফোন ডিসপ্লের টাচ স্যাম্পলিং রেট যত দ্রুত হবে, টাচ এর রেসপন্স তত দ্রুত হবে। কমান্ড দিতে এবং প্রতিক্রিয়া পাওয়ার জন্য স্ক্রীন স্পর্শ করতে যত কম সময় লাগবে, ফোন ইউজারদের কাছে ফোনটা ততই ফাস্ট বলে মনে হবে। অন্যদিকে, যদি টাচ স্যাম্পলিং রেট কম হয়, তাহলে ডিসপ্লে টাচ করার পর যেকোনো কিছু খুলতে এবং ফিডব্যাক আসতে কিছুটা সময় লাগবে এবং আপনি এটা অনুভব করবেন যে ফোনটি ধীর গতিতে চলছে।

আমাদের ফেসবুকে ফলো করার জন্য এখানে ক্লিক করুন