চীন থেকে উধাও 2 কোটিরও বেশি স্মার্টফোন ইউজার, জেনে নিন বিশেষজ্ঞদের মতামত

আজকের দিনে দাঁড়িয়ে ভারত থেকে শুরু করে বিভিন্ন পশ্চিমি দেশগুলিসহ গোটা বিশ্বের সামনে সবচেয়ে বড় সমস‍্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ। গত বছরের শেষের দিকে চীনের উহান শহরে প্রথম বার সংক্রমিত হ‌ওয়ার পর থেকে অনেকটা ঠিক বাধভাঙ্গা জলের মতো গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে এই করোনা ভাইরাস বা কোভিড-19। এইচ‌আইভি, নিপা, ইবোলা ভাইরাসের থেকেও এই ভাইরাসকে বেশি ভয়ঙ্কর মনে করা হচ্ছে কারণ সামান্য সংস্পর্শের মাধ্যমে এবং খুব কম সময়ের মধ্যেই বিস্তৃত এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে এই করোনা ভাইরাস। একদিকে যেমন বিশেষজ্ঞরা ক্রমাগত চেষ্টা করে চলেছে এই ভাইরাসের প্রতিকার খোঁজার তেমনই গোটা বিশ্বের একটি বড় অংশে বলা হচ্ছে চীন ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের গবেষণাগারে এই ভাইরাস তৈরি করে পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে চীন সম্পর্কে আরও এক চাঞ্চল্যকর খবর পাওয়া গেছে। চীন থেকে বেমালুম উবে গেছে 21 মিলিয়ন মোবাইল ইউজার।

আরও পড়ুন: 22 এপ্রিল লঞ্চ হবে Motorola এর ফ্ল‍্যাগশিপ ফোন, এতে থাকতে পারে 108 MP ক‍্যামেরা

চীনে গত জানুয়ারি মাস থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এবং মার্চ মাসেও কিছু পরিমাণ স্মার্টফোন ইউজারের ফোন নাম্বার বন্ধ হয়ে যায়। এই বন্ধ হয়ে যাওয়া মোবাইল ইউজারের মোট সংখ্যা 21 মিলিয়ন অর্থাৎ 2 কোটি 10 লক্ষ। সংখ‍্যাটা কি খুব কম মনে হচ্ছে? তবে জানিয়ে রাখি এই বিপুল পরিমাণ জনসংখ্যা ভারতের মুম্বাই ও দিল্লির মোট জনসংখ্যার চেয়ে কিছুটা কম। এবার হয়ত বুঝতে সুবিধা হচ্ছে কেন সামান্য মোবাইল ফোন ইউজার উধাও হ‌ওয়ার ঘটনা চীনকে বড় প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। অফিসিয়ালিচীন সরকার এবিষয়ে আলোকপাত না করলেও বিশেষজ্ঞরা অনেক সম্ভাব্য তথ্য জানিয়েছেন।

ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে স্মার্টফোন মূলত যোগাযোগ ও বিনোদনের জন্য ব‍্যবহৃত হলেও চীনের মতো অত‍্যাধুনিক দেশে মোবাইল ফোন মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অন‍্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। সেখানে দাঁড়িয়ে এক সঙ্গে এত সংখ্যক মোবাইল ফোন সাবস্ক্রিপশন উবে যাওয়া নেহাত কাকতলীয় হতে পারে না। গত তিন মাসে চীনের অন‍্যতম বড় তিনটি টেলিকম কোম্পানি চায়না মোবাইল, চায়না ইউনিকম এবং চায়না টেলিকম মিলিতভাবে হারিয়েছে দুটি কোটিরও বেশি মোবাইল ইউজার। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিশেষজ্ঞরা এবিষয়ে কী বলছেন।

আরও পড়ুন: বেশ কিছু সার্টিফিকেশন সাইটে স্পট হল Realme 5G স্মার্টফোন, খুব তাড়াতাড়ি হতে পারে লঞ্চ

বিশেষজ্ঞদের একশ্রেণীর মতে, এই মোবাইল ইউজার সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে গত তিনমাসে অর্থাৎ এই বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে। আবার এই সময়েই চীনের অধিকাংশ এলাকায় লকডাউন কার্যকর ছিল, যেমন এখন ভারতে আছে। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে যেসব চাকুরীজীবী, ব‍্যবসায়ী বা পড়ুয়াদের বাড়ির থেকে দূরে থাকতে হত তাদের বাধ‍্যগত বাড়ি ফিরে যেতে হয়। এরপর অতিরিক্ত এবং অকারণ খরচা বাঁচানোর জন্য তাদের অতিরিক্ত মোবাইল নাম্বার বা জীবিকাগত ভাবে যে ফোন নাম্বার ব‍্যবহৃত হত অনেকেই সেগুলি বন্ধ করে দেন বলে মনে করা হচ্ছে।

আবার অনেকে মনে করেন, গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে গোটা বিশ্বে 5জি টেকনোলজি পেশ করা হয়। যা এখন ক্রমশ প্রচলিত হয়ে পড়ছে। এমতাবস্থায় আগ্ৰহী গ্ৰাহকরা স্বেচ্ছায় তাদের পুরোনো 3জি বা 4জি নাম্বার বন্ধ করে নতুন কানেকশন নিয়েছেন বা নিতে চাইছেন বলে মনে করা হচ্ছে। অথচ করোনা ভাইরাস এবং লকডাউনের দৌলতে সমস্ত পরিকাঠামো ভেঙে পড়ে।

আরও পড়ুন: Samsung ইউজাররা সাবধান! এখন ফোন আপডেট করলে হতে পারে খারাপ

আবার খরচা বেশি থাকার ফলে চীনে অনেকে ভয়েস কল ও ডেটার জন্য আলাদা আলাদা নাম্বার ব‍্যবহার করত। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করার পর অবশেষে চীনের ইন্টারনেট ডেটা খরচ কমে যাওয়ায় অনেকে তাদের অতিরিক্ত সিম বন্ধ করে দেন। বিশেষজ্ঞরা বর্তমানে এমন অনেক সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে আলোচনা করে চলেছেন। কিন্তু চীনের কোম্পানিগুলি তাদের তরফ থেকে তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাই তাদের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত সঠিকভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়। কিন্তু গোটা বিশ্ব যেখানে দাঁড়িয়ে চীনকে সন্দেহ করে চলেছে সেখানে এটা বললেও ভুল হবে না যে এই স্মার্টফোন ইউজার উবে যাওয়ার পেছনে সরাসরি করোনা ভাইরাসের প্রভাব রয়েছে। আবার এটা বলাও ঠিক নয় যে 21 মিলিয়ন মানুষ চীনে মারা গেছেন।

আমাদের ফেসবুকে ফলো করার জন্য এখানে ক্লিক করুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here