শুরু হল 6G এর প্রস্তুতি, দুনিয়া বদলে দেবে এই টেকনোলজির ক্ষমতা

5জির জন্য এই বছরটি অত‍্যন্ত উল্লেখযোগ্য হতে চলেছে। মার্কেট সব বাজেট ক‍্যাটাগরির 5জি নেটওয়ার্ক সাপোর্টেড স্মার্টফোনে ভরে যাচ্ছে। ভারতেও 5জি ট্রায়াল অনুমোদন পেয়ে গেছে এবং টেলিকম কোম্পানিগুলি কিছু টেক ব্র‍্যান্ডের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দেশের মধ্যে সফল 5জি পরীক্ষাও সম্পন্ন করবে। কিন্তু জানিয়ে রাখি ভারত যেখানে 5জি টেকনোলজি আপন করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে অন‍্যদিকে বিশ্বের বেশ কিছু দেশ 5জি টেকনোলজি ব‍্যবহার করার পর এবার 6জির দিকে পা বাড়াচ্ছে। এই আগামী 6জি টেকনোলজির ক্ষমতা দেখে বিশ্বের শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলির মধ্যে এই টেকনোলজি নিয়ে কাজ করার এমন তাড়াহুড়ো শুরু হয়ে গেছে যেন এটি কোনো ইন্টারনেট টেকনোলজি নয় বরং কোনো অত‍্যাধুনিক অস্ত্র।

6G এর প্রস্তুতি

ভারতে 5জি এখনও পর্যন্ত শুরু না হলেও বিশ্বের বেশ কিছু দেশে দেদারে উপভোগ করা হচ্ছে এই টেকনোলজি। বর্তমানে চীন, জাপান, কোরিয়া, আমেরিকা ও অষ্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি বেশ কিছু ইউরোপীয় দেশের সাধারণ মানুষ 5জি ব‍্যবহার করছে। বিশ্বের ইতিহাসে একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশক যেমন 5জি টেকনোলজি তৈরির জন্য লেখা থাকবে তেমনই তৃতীয় দশককে মনে করা হবে 6জি ডেভেলপমেন্টের জন্য। চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, আমেরিকা ও ফিনল্যান্ডের মতো বেশ কিছু দেশ ইতিমধ্যে 6জির পথে হাঁটা শুরু করে দিয়েছে। রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট থেকে শুরু করে আধুনিক সরঞ্জাম ও ইঞ্জিনিয়ার প্রভৃতি প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলিতে এইসব দেশ বিনিয়োগ করা শুরু করেছে।

এই মুহুর্তে প্রতিটি দেশ অন‍্য কোনো দেশের আগে নিজেদের হাতে 6জি টেকনোলজি তৈরি দেখতে চাইছে। উপরোক্ত দেশগুলি এই লিস্টে সবার থেকে এগিয়ে এবং শুধুমাত্র পৃথিবীতে নয় বরং মহাকাশেও এই নিয়ে কাজ হচ্ছে। রিপোর্ট অনুযায়ী কিছু দেশ 6জি কানেক্টিভিটির জন্য তাদের স‍্যাটেলাইটে মোডিফাই করেছে এবং প্রয়োজন হলে নতুন স‍্যাটেলাইট‌ও লঞ্চ করা হবে বলে জানা গেছে। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ চায় না তাদের আগে অন্য কোনো সরকারের হাতে 6জি টেকনোলজির ক্ষমতা পৌঁছে যাক, এর থেকেই এই টেকনোলজির শক্তি সম্পর্কে ধারণা করা যায়।

কোন কোম্পানি আনছে 6G?

কিছু দিন আগে।খবর পাওয়া গিয়েছিল আমেরিকা তথ্য গোটা বিশ্বের অন‍্যতম টেক কোম্পানি অ্যাপেল চাকরির খালি পদে নিযুক্তির জন্য পোস্ট করেছে যেখানে কোম্পানি ‘নেক্সট জেনারেশন রেডিও’ নিয়ে কাজের জন্য ইঞ্জিনিয়ারদের ভর্তি করছে। বলা হচ্ছে এই তথাকথিত ‘নেক্সট জেনারেশন রেডিও’ আর কিছুই নয় বরং 6G। এর আগে দক্ষিণ কোরিয়ার ইলেকট্রনিক কোম্পানি স‍্যামসাং তাদের দেশে 6জি নিয়ে কাজের জন্য রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের সূচনা করেছিল। আরেক কোরিয়ান কোম্পানি এলজিও 6জি টেকনোলজি নিয়ে যথেষ্ট অ্যাক্টিভ হয়ে উঠেছে। চীনের কোম্পানি হুয়াই এতদিন ট্রাম্প সরকারের জন্য কিছুটা চাপের মধ্যে থাকলেও বর্তমানে 6জির লড়াইয়ে কোম্পানি বেশ কিছুটা এগিয়ে গেছে।

6G এর ক্ষমতা

যদি বলা হয় 6জি ইন্টারনেটের স্পীড বহু গুণ বাড়িয়ে দেবে, বড় বড় ফাইল চোখের নিমেষে ডাউনলোড হয়ে যাবে তবে জানিয়ে রাখি, হ‍্যাঁ এমনটা হবেই। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। 6জি শুধুমাত্র ফাস্ট ইন্টারনেট স্পীড নয় বরং এমন সব অ্যাডভান্স টেকনোলজি নিয়ে আসবে যা আজকের দিনে ভাবাও যায় না। মোবাইল টেকনোলজির পাশাপাশি সাধারণ মানুষের জীবনকেও আরও অ্যাডভান্স ও ফাস্ট করে তুলবে 6জি। 6জির মাধ্যমে Virtual Reality (VR) এবং Augmented Reality (AR) এর নতুন রূপ দেখা যাবে এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার অন‍্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে।

কমিউনিকেশনের পাশাপাশি ইন্টেলিজেন্স ও IOT অর্থাৎ ইন্টারনেট অফ থিংসের ক্ষেত্রেও যুগান্তকারী হয়ে উঠবে 6জি টেকনোলজি। মনে করা হচ্ছে 6জি কার্যকর হয়ে ওঠার পর রোবটের চলন‌ও বহু গুণে বেড়ে যাবে। যেভাবে বর্তমানে স্মার্টফোন ও স্মার্ট টিভি ছাড়াও স্মার্ট হোম অ্যাপ্লায়েন্স যেমন ফ্রিজ, লাইট, ফ‍্যান, সিসিটিভি, স্পীকার প্রভৃতি সাধারণ জীবনের অংশ হয়ে উঠছে তেমনই 6জি টেকনোলজি রোবটকেও সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এই ফিল্ডের এক্সপার্টদের মতে, আগামী 2030 সালের মধ্যে 6জি টেকনোলজি গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে।

আমাদের ফেসবুকে ফলো করার জন্য এখানে ক্লিক করুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here