টেক কোম্পানি আইফোন সবূ মাত্র আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাদের নতুন আইফোন পেশ করেছে। অ্যাপেলের পক্ষ থেকে আইফোন 10আর, আইফোন 10এস ও আইফোন 10এস ম্যাক্স লঞ্চ করা হয়েছে। আইফোন 10এস ও আইফোন 10এস ম্যাক্স এখনও পর্যন্ত লঞ্চ করা সব আইফোনের থেকে আলাদা। এর কারণ হল এই ফোনদুটিতে দেওয়া ডুয়েল সিম সাপোর্ট। এখন আইফোন ইউজাররাও আইফোনে একসাথে দুটি সিম ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু এর থেকেও বড় কথা এতে একটি ফিজিক্যাল সিম থাকবে ও অপরটি ই-সিম থাকবে।
কোম্পানি জানিয়েছে যেহেতু চীনে ই-সিম ব্যবহারের কোনো উপায় নেই তাই সেখানে আইফোন 10এস ম্যাক্সের ডুয়েল সিম স্লটওয়খলা মডেল যাবে, তবে ভারতসহ অন্যান্য দেশে ফোনটির ই-সিমযুক্ত মডেলই পাঠানো হবে। তাই প্রশ্ন করা স্বাভাবিক যে ই-সিম কি এবং এর ব্যবহার কিভাবে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক আইফোন 10এস ও আইফোন 10এস ম্যাক্সে একসাথে দুটি সিম বিশেষ করে ই-সিম কিভাবে কাজ করবে।
কিভাবে কাজ করে ই-সিম?
ই-সিম ফোন হার্ডওয়্যারেরই একটি অংশ এবং অপারেটর প্রোফাইল ডাউনলোড না করা পর্যন্ত এটি অ্যাক্টিভেট হবে না। এতদিন পর্যন্ত আইফোনে অ্যাপেল স্মার্টওয়াচ কানেক্ট করার জন্য ব্লুটুথ ব্যবহার করা হত, কিন্তু এখন ই-সিমের দৌলতে স্মার্টওয়াচ, ফিটনেস ব্যান্ড বা যে কোনো ওয়্যারেবল ডিভাইস সরাসরি মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ফোনে কানেক্ট করা যাবে। অর্থাৎ যে নাম্বার আইফোনে দেওয়া আছে সেই একই নাম্বার ইউজার তাদের অ্যাপেল ওয়াছেও ব্যবহার করতে পারবেন।
ই-সিম কি?
ই-সিম ইম্বেডেড সিমের ছোট নাম। ই-সিম আকারে যে কোনো সাধারণ সিম কার্ডের চেয়ে 10 গুণ ছোট। এই সিম অন্য সিমের মত ফোনে ভরা হয় না বরং যখন ফোন তৈরি করা হয় তখন একই সঙ্গে এই সিমও তৈরি করা হয়। এটিকে ফোনের হার্ডওয়্যারের মধ্যেই ধরা হয় এবং একে ফোনের বাইরে বের করা সম্ভব নয়। আইফোন 10এস ও আইফোন 10এস ম্যাক্সে এই ই-সিম ব্যবহার করা হয়েছে। এটি ফোনের হার্ডওয়্যার পার্ট হলেও ততক্ষণ অ্যাক্টিভেট হয় না যতক্ষণ না এর প্রোফাইল ফোনে অপারেটর নেটওয়ার্ক থেকে ডাউনলোড করা হয়।
এর লাভ কি?
আইফোন 10এস ও আইফোন 10এস ম্যাক্স অ্যাপেলের প্রথম ডুয়েল সিম ফোন। এই দুটি আইফোনে একই সঙ্গে দুটি আলাদা কোম্পানির নাম্বার ব্যবহার করা যাবে। ফোনে দুটি সিম স্ট্যান্ডবাই মোডে থাকবে অর্থাৎ একই সময়ে দুটি সিম থেকে কল রিসিভ করা ও ডায়াল করা সম্ভব।
আইফোন 10এস ও আইফোন 10এস ম্যাক্সে ডুয়েল সিমের সুবিধা পাওয়া যাবে কিন্ত এর মধ্যে একটি সিম ফোনে ভরতে হবে না এটি আগে থেকেই দেওয়া আছে। সমগ্ৰ বিশ্বে মোট 14টি নেটওয়ার্ক অ্যাপেলের ই-সিম ফিচার সাপোর্ট করে। প্রসঙ্গত আইফোন 10এস ও আইফোন 10এস ম্যাক্সে দেওয়া ই-সিম সিডিএমএ ও ফোনের ফিজিক্যাল সিম স্লটে শুধু জিএসএম সিম ব্যবহার করা যাবে। অর্থাৎ নতুন আইফোনে এক সঙ্গে দুটি জিএসএম বা দুটি সিডিএমএ নাম্বার ব্যবহার করা যাবে না।
ভারতে কিভাবে কাজ করবে?
অ্যাপেল বলে দিয়েছে ভারতে শুধুমাত্র দুটি টেলিকম কোম্পানি আইফোন 10এস ও আইফোন 10এস ম্যাক্সের ই-সিম ফিচার সাপোর্ট করবে। এই দুটি কোম্পানি হল দেশের সবচেয়ে বড় টেলিকম কোম্পানি এয়ারটেল ও সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বেড়ে চলা কোম্পানি রিলায়েন্স জিও। আইফোন 10এস ও আইফোন 10এস ম্যাক্স দেশে এয়ারটেল ও রিলায়েন্স জিওর সঙ্গে বান্ডিল অফারে বেচা হবে।
প্রসঙ্গত রিলায়েন্স জিও ও এয়ারটেল আগে থেকে ভারতে অ্যাপেল ওয়াচ সিরিজ 3 বিক্রি করছে। অ্যাপেলের এই ওয়াচ সিরিজ 3 ফোন ছাড়াই কল ডায়াল ও রিসিভ করার সুবিধা দেয়। একই ভাবে আইফোন 10এস ও আইফোন 10এস ম্যাক্সে অবস্থিত ই-সিমের মাধ্যমে ভোডাফোন ও এয়ারটেল নেটওয়ার্কে কোনো অতিরিক্ত খরচা ও ব্লুটুথ কানেক্টিভিটি ছাড়াই আইফোনে আসা কল অ্যাপেল ওয়াচ দিয়ে রিসিভ করা যাবে।
কেন চীনের মডেল আলাদা?
অ্যাপেল আইফোন 10এস ও আইফোন 10এস ম্যাক্সে দেওয়া ডুয়েল সিম সাপোর্ট চীনের জন্য আলাদা। চীনের সঙ্গে সঙ্গে হংকং ও মাকাউতে ই-সিম ফিচার দেওয়া হবে না। এইসব জায়গার জন্য অ্যাপেল এমন মডেল লঞ্চ করবে যা দুটি সিম স্লট সাপোর্ট করে। অর্থাৎ ইউজার নিজের ইচ্ছামত সিম ব্যবহার করতে পারবেন।
চীন, হংকং ও মাকাউয়ের আইফোন 10এস ও আইফোন 10এস ম্যাক্সে সিম স্লট একটিই থাকবে কিন্তু এই ট্রের দুটি আলাদা সিম ওপর নিচে লাগানো যাবে। প্রসঙ্গত ভারতে আইফোন 10এস ও আইফোন 10এস ম্যাক্স আগামী 28শে সেপ্টেম্বর থেকে কেনা যাবে। নতুন আইফোন গোল্ড, সিলভার ও স্পেস গ্ৰে কালারে পাওয়া যাবে।
নতুন আইফোন 10এস ও আইফোন 10এস ম্যাক্সের ফিচার ও স্পেসিফিকেশন জানতে খানে ক্লিক করুন।
নতুন আইফোন 10এস ও আইফোন 10এস ম্যাক্সের ভারতীয় দাম জানতে এখানে ক্লিক করুন।