Online Gaming ইন্ডিয়াতে খুব দ্রুতই বেড়ে চলেছে। PUBG, BGMI, FreeFire, Candy Crush, Ludo King এবং Call of Duty এর মতো বহু গেম আছে, যেগুলি ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইন খেলতে হয়। ভারতের গেমিং ইন্ডাস্ট্রি থেকে একটি আকর্ষণীয় রিপোর্ট সামনে এসেছে যেখানে দাবি করে বলা হয়েছে যে আগামী সময়ে ইন্ডিয়াতে অনলাইন গেমিঙের বাজার খুবই দ্রুত উন্নতি করতে চলেছে এবং 2025 সালে সেটি 7 বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ প্রায় 53 হাজার কোটি টাকা হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: Elon Musk এর ইন্টারনেট সার্ভিসের জন্য দিতে হবে এত টাকা, দেখে নিন কত হবে সাবস্ক্রিপশন চার্জ!
ইন্ডিয়ান গেমিং ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কিত এই তথ্য গুলিকে রেডশির ওয়েবসাইট নিজের রিপোর্টে শেয়ার করেছে। এই রিপোর্টের অনুযায়ী 2020 তে ভারচে অনলাইন গেমের বাজার 2.2 বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ 16,500 কোটি টাকার কাছাকাছি ছিল। কিন্তু আগামী চার বছরে অর্থাৎ 2025 এ এই সংখ্যাটি বেড়ে 7 বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ প্রায় 52,500 কোটি টাকা হয়ে যাবে। রিপোর্ট অনুযায়ী শুধুমাত্র চার বছরে এই বাজার তিন গুন বেড়ে যাবে।
পরিবার গুলির জন্য সতর্কতা
এই রিপোর্টে গেমিং ইন্ডাস্ট্রির লাভের তথ্য সামনে নিয়ে এসেছে, কিন্তু গেমের অভ্যাসের জন্য চিন্তিত পরিবার গুলির জন্যে এই রিপোর্টটি সতর্কতাও হতে পারে। এরকম বহু ঘটনা শোনা যায় যেখানে বাচ্চারা গেমে আপগ্রেড করার জন্য নিজের বাড়ি থেকেই টাকা চুরি করে। আবার অন্য দিকে গেমের অভ্যাসের কারনেও বহু দূর্ঘটনাও শোনা যায়। এখানে বলে দিই যে রিপোর্টে বলা হয়েছে যে টিয়ার-2 এবং ছোট শহরের লোকেরাও অনলাইন গেমিঙে টাকা খরচ করছে। এমতাবস্থায় এই ইন্ডাস্ট্রি সাধারণ মানুষ এবং তাদের পরিবারের জন্য বিপদ সঙ্কেতও।
আরও পড়ুন: Jio ইউজারদের জন্য আবারও বড়ো ঝাটকা, 520 টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে গেলো Recharge Plan গুলির
এই সমস্ত কারণগুলির জন্যে হিট হয়েছে গেমিং ইন্ডাস্ট্রি
সাধারণ মানুষেরা মোবাইল ফোনে গেম সর্বদাই খেলছে, কিন্তু বিগত কিছু সময় ধরে ইন্ডিয়াতে অনলাইন গেমের বাজার অনেকটাই বেড়ে উঠেছে। নীচে এমন কিছু কারন সম্পর্কে বলা হয়েছে যার কারনে ইন্ডিয়াতে অনলাইন গেম খুবই দ্রুত বেড়ে উঠেছে।
Smartphone Capabilities
যত হেভি গেম হবে সেটিকে রান করার জন্যেও সেইরকম শক্তিশালী মোবাইল ফোনেরও প্রয়োজন। গেম খেলা সেইসব ইউজারদের এই প্রয়োজনটি স্মার্টফোন ব্র্যান্ড গুলি ভালো ভাবেই বুঝেছে এবং ভালো গ্রাফিক্স আর শক্তিশালী প্রসেসরের মোবাইল ফোন দেশে প্রতিনিয়ত লঞ্চ করছে। এই মোবাইল কোম্পানি গুলি নিজের ফোনের প্রসেসরটিকে স্ট্রং প্রমাণিত করার জন্য এই গেম গুলির সাহায্য নেয় এবং বিজ্ঞাপনে বলে তাদের ফোনগুলি এই সমস্ত গেম গুলি খেলার জন্য সুবর্ণ সুযোগ করে দেয়। স্মার্টফোনে ভালো প্রসেসর হওয়ায় বহু লোকই অনলাইন গেমিঙের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। এই পয়েন্ট গুলি ল্যাপটপ এবং কম্পিউটারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
আরও পড়ুন: Jio এর সবচেয়ে সস্তা মান্থলি রিচার্জ প্ল্যানে পাওয়া যাবে 2GB ডেটা এবং আনলিমিটেড ফ্রি কল
Internet Access
আগে যেকোনো মোবাইল ইউজাররা এতোটা ইন্টারনেট পেত, যার মাধ্যমে তারা কিছু সোশ্যাল মিডিয়া সাইট, ম্যাসেজিং অ্যাপ এবং অল্প ব্রাউজিং করতে পারতো। কিন্তু এখন Reliance Jio, Airtel এবং Vodafone Idea এর মতো কোম্পানি গুলি অনেক ইন্টারনেট ডেটা প্রদান করে এবং মোবাইল ইউজাররা এই ডেটার ব্যবহার দীর্ঘ সময় পর্যন্ত অনলাইন গেম খেলায় ব্যবহার করে। ইন্টারনেটের বেড়ে যাওয়টিও দেশে অনলাইন গেমের বাজার বৃদ্ধি হওয়ায় সুবিধাজনক হয়েছে।
Lockdown এর মাধ্যমেও সুবিধা পেয়েছে
কোরোনাকালও অনলাইন ইন্ডাস্ট্রির জন্য খুব সুবিধাজনক হয়েছে। কোভিডের কারনে দেশে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত লকডাউন চলেছে এবং লোকেদের কাজ বন্ধ থাকায় তারা ঘরে বসে থাকতে বাধ্য হয়েছে। স্কুল এবং কলেজ বন্ধ থাকায় স্টুডেন্টরা স্মার্টফোনকে নিজের সাথী হিসেবে বেছে নিয়েছে। এই সময়ে টাইমপাসের জন্য লক্ষাধিক লোকেরা অনলাইন গেমিংকে বেছে নিয়েছিল। লকডাউনে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছিল, কিন্তু এই সময়টি অনলাইন গেমিং ইন্ডাস্ট্রির জন্য লাভজনক হয়েছে।
influencers দের প্রভাব
একদিকে যেমন মোবাইল ব্র্যান্ড গুলি নিজের স্মার্টফোনকে গেমিং ফোন হিসেবে প্রোমোট করেছে আবার অন্যদিকে কিছু এমন চেহারা দেখা গেছে যারা নিজেদের ‘গেমার’ বলে পরিচয় দিয়েছে। এই লোকগুলি কোনো সেলিব্রিটির থেকে কম নয় এবং এদের ফ্যান ফলোয়িংও প্রচুর। এরকম ইনফ্লুয়েন্সারদের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে লোকেরা অনলাইন গেমিঙের প্রতি আরও আকৃষ্ট হয়েছে। বহু গেমের টুর্নামেন্টও আয়োজিত হয় এবং বিজেতারা অনেক পুরস্কারও পায়। এই সমস্ত জিনিস গুলির কারনে ইন্ডিয়াতে অনলাইন গেমিং বৃদ্ধি পেয়েছে।
নেগেটিভ প্রভাবও পড়ছে Online Gaming এর কারণে
এটি সত্যি যে অনলাইন গেমিং কিশোর এবং যুবকদের খুব দ্রুত নিজের প্রতি আকৃষ্ট করছে এবং বাচ্চারা এই গেম গুলির কারনে অন্যান্য গতিবিধির থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। বিগত দিনেই দশম শ্রেণীর দুই ছাত্র গেম খেলায় এতটাই মগ্ন হয়ে গিয়েছিল যে তারা রেলওয়ে ট্র্যাকে ট্রেনের আওয়াজও শুনতে পায়নি আর ফলে তাদের জীবনহানি ঘটে। পড়াশোনা এবং কাজের থেকে দূরে করার সাথে এমন কিছু ঘটনাও দেখা গেছে যেখানে এরকম গেম গুলি পারিবারিক কলহ এবং মানসিক সমস্যার কারন হয়ে দাড়িয়েছে। এমতাবস্থায় প্রয়োজন যে এই গেমগুলিকে সচেতন হয়ে খেলা এবং পরিবারের বড়োদের কড়া নজরও রাখা উচিত।
আমাদের ফেসবুকে ফলো করার জন্য এখানে ক্লিক করুন