আধার কার্ড বা আধার নাম্বার আজ ভারতীয় নাগরিকদের সবচেয়ে বড় পরিচয়পত্রে পরিণত হয়েছে। একজন ব্যাক্তির সম্পর্কে প্রায় সব তথ্য এই নাম্বারের সঙ্গে এখন যুক্ত। শুরু থেকেই আধার সমালোচনার শীর্ষে উঠে রয়েছে। কিছু মানুষের কাছে এটি সুরক্ষিত আবার কিছু মানুষের কাছে এটি মোটেও সুরক্ষিত নয়। এর আগে আধার সম্পর্কে এমন কিছু ঘটনা সামনে এসে দাড়িয়েছে যার ফলে আধার সত্যিই প্রশ্নের মুখে দাড়িয়ে। এবার ইউআইডিএআই এর পক্ষ থেকে কড়া সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে যাতে কোনো ব্যাক্তি ইন্টারনেট বা সোশ্যাল সাইটে তার আধার নাম্বার শেয়ার না করেন।
ইউআইডিএআই অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আধার নাম্বার শেয়ার না করার কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে। ডিপার্টমেন্ট থেকে আধার নাম্বার বা আধার সম্পর্কিত অন্য কোনো তথ্য জানাতে নিষেধ করা হয়েছে। ইউআইডিএআই বলেছে আধার নাম্বার সর্বসম্মুখে আনলে বা এই কাজের জন্য উসকানি দিলে সেই ব্যাক্তির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কিছু দিন আগে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা থেকে সবাইকে শিক্ষা নিতে বলা হয়েছে।
কি ঘটেছে?
গত সপ্তাহে টেলিকম রেগূলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া অর্থাৎ ট্রাইয়ের হেড আরএস শর্মা তার টুইটার হ্যান্ডেলে নিজের আধার নাম্বার শেয়ার করেন। আরএস শর্মা এমন করেছিলেন, কারণ তিনি টুইট করেছিলেন আধার নাম্বার সম্পূর্ণ সুরক্ষিত এবং কোনো হ্যাকার এদের সার্ভারের সিকিউরিটি ভাঙ্গতে পারবে না। শর্মার এই বয়ানের পর লোকজনের নানারকম মন্তব্য করতে থাকে।
কিছু ইউজার ট্রোল করে বলে, “যদি আধার নাম্বার এতটাই সুরক্ষিত হয় তবে আপনার আধার নাম্বার শেয়ার করুন”। এরপর টুইটারে লোকজনের লোকজনের এই চ্যালেঞ্জ অ্যাক্সেপ্ট করে আরএস শর্মা তার আধার নাম্বার শেয়ার করে দেন।
শর্মার আধার নাম্বার শেয়ারের কিছুক্ষণ পরেই লোকজন তার টুইটার অ্যাকাউন্টে তার ব্যাক্তিগত তথ্য পোস্ট করতে থাকেন। আরএস শর্মার ফোন নাম্বার, তার বাড়ির ঠিকানা, তার হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার, শর্মার ব্যবহার করা ফোন মডেল, এমনকি হোয়াটসঅ্যাপ প্রোফাইল পিকচার পর্যন্ত লোকজন টুইটে শেয়ার করে দেয়।
ব্যাপার এখানেই থেমে থাকেনি। লোকজন শর্মার ব্যাঙ্ক ডিটেইলস, তার অ্যাকাউন্ট নাম্বার ও পাসপোর্ট নাম্বার পর্যন্ত তাকে টুইট করে দেন। কয়েক জন তো তার অ্যাকাউন্টে টাকা পর্যন্ত জমা করতে থাকে। কিছু লোক আরএস শর্মার অ্যাকাউন্টে মাত্র 1 টাকা করে ট্রান্সফার করেন। টুইটারে ঘটে যাওয়া এই ঘটনার পর শর্মা জী মেনে নেন যে আধার সার্ভার খুব একটা সুরক্ষিত নয় এবং ইউআইডিএআই নড়েচড়ে বসেছে।
ইউআইডিএআই আরএস শর্মার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেবে কি না তা এখনও জানা যায়নি। প্রসঙ্গত যখন আধার প্রজেক্টের শুরু হয় তখন ইউআইডিএআই এর ডাইরেক্টর জেনারেল আরএস শর্মাই ছিলেন।